গণক-জ্যোতিষী হইতে সাবধান


যারা কাঁকর, যবদানা ইত্যাদি মেরে (ফালনামা খুলে বা হাত চালিয়ে বা হস্তরেখা পড়ে অথবা রাশি গণনা করে) ভাগ্য-ভবিষ্যৎ তথা অজানা ও গায়েবী বিষয়ের খবর বলে, তাদের নিকট এসে ঐ শ্রেণীর কিছু জিজ্ঞাসা করা বৈধ নয়।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে লোক আররাফ-এর (গণকের) নিকট গেল এবং তাকে কোন ব্যাপারে প্রশ্ন করল, চল্লিশ রাত্রি তার কোন সালাত (নামাজ) গ্রহণযোগ্য (কবুল) হবে না।
[গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ সালাম, হাদিস নম্বরঃ ৫৭১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৬২৭, ইসলামিক সেন্টার ৫৬৫৬]

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন-
‘‘যে ব্যাক্তি গণকের কাছে আসলো, অতঃপর গণক যা বললো তা সত্য বলে বিশ্বাস করলো, সে মূলতঃ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর যা নাযিল করা হয়েছে তা অস্বীকার করলো।
[আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসায়ী, ইবনে মাজা ও হাকিম এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন]

ইমাম বাগাবী (রহ:) বলেন عراف (গণক) ঐ ব্যক্তিকে বলা হয় যে ব্যক্তি চুরি যাওয়া জিনিস এবং কোন জিনিস হারিয়ে যাওয়ার স্থান ইত্যাদি বিষয় অবগত আছে বলে দাবী করে।
তাই মূলতঃ গণক বলা হয় এমন ব্যক্তিকে যে ভবিষ্যতের গায়েবী বিষয় সম্পর্কে সংবাদ দেয়। (অর্থাৎ যে ভবিষ্যদ্বানী করে)। যে ব্যক্তি ভবিষ্যতের গোপন খবর বলে দেওয়ার দাবী করে তাকেও গণক বলা হয়। আবার যে ব্যাক্তি কারো দিলের (মনের) খবর (গোপন) জানার ও বলে দেওয়ার দাবী করে, সেও গণক।

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, কিছু লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গণকদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, ‘‘ওরা অপদার্থ।’’ (অর্থাৎ ওদের কথার কোন মূল্য নেই)। তারা নিবেদন করল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! ওরা তো কখনো কখনো আমাদেরকে কোন জিনিস সম্পর্কে বলে, আর তা সত্য ঘটে যায়।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘এই সত্য কথাটি জ্বিন (ফিরিশ্তার নিকট থেকে) ছোঁ মেরে নিয়ে তার ভক্তের কানে পৌঁছে দেয়। তারপর সে ঐ (একটি সত্য) কথার সাথে একশ’টি মিথ্যা মিশিয়ে দেয়।’’
[বুখারী ও মুসলিম]

বুখারীর অন্য এক বর্ণনায় আছে, যা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন যে, ‘‘ফিরিশ্তাবর্গ আল্লাহর বিধানসমূহ নিয়ে মেঘমালার অভ্যন্তরে অবতরণ করেন এবং সে সব কথাবার্তা আলোচনা করেন, যার সিদ্ধান্ত আসমানে হয়েছে। সুতরাং শয়তান অতি সংগোপনে লুকিয়ে তা শুনে ফেলে এবং ভবিষ্যৎ-বক্তা গণকদের মনে প্রক্ষিপ্ত করে। তারপর তার সাথে তারা নিজেদের পক্ষ থেকে একশত মিথ্যা মিশ্রণ করে তা প্রচার করে।’’
[রিয়াযুস স্বা-লিহীন, অধ্যায়ঃ নিষিদ্ধ বিষয়াবলী]

আল্লাহ আমাদের সকলকে গণক ও জ্যোতিষীদের ভণ্ডামি হইতে হেফাজত করুন। আমিন।


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.