25th December (X-Mas Day)
জিঙ্গল বেল বেজে উঠেছে। ...
বড়দিন সমাগত। প্রায় সমগ্র বিশ্বের আপমর জনসাধারন জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে, কেক মোমবাতি আর অ্যালকোহল সহযোগে ঈশা (আঃ) -এর জন্মদিন পালনের উৎসবে সামিল। আর মুসলিম জাতিও এই সমারোহ দূরে সরে নেই। মুহাম্মদ (সাঃ) -এর জন্মদিনের পর এবার ঈশা (আঃ) -এর জন্মদিন। যুক্তি এই যে মুহাম্মদ (সাঃ)জন্মদিনে আমরা "মিলাদ উন নবী" পালন করতে পারি তবে বড়দিন পালন করাও নেকির কাজ। কারণ মুহাম্মদ (সাঃ)-এর মতই ঈশা (আঃ) ও আল্লাহ-এর রসুল।
অথচ মুহাম্মদ (সাঃ) নিজে না তিনি তাঁর নিজের জন্মদিন পালন করেছেন না তিনি তাঁর পূর্বে আসা নবীদের জন্মদিন পালন করেছেন। সালাফে সালেহিন দের যুগেও এই জন্মদিন পালনের কথা পাওয়া যায়না।
আহালে সুন্না ওয়াল জামাত এই ব্যাপারে একমত যে ইসলামে জন্ম দিবস ও মৃত্যু দিবস পালন করা হারাম। তবুও এই নিষিদ্ধ কাজে মুসলিম জাতির এত উৎসাহ!!! আর এই নিষিদ্ধ আনন্দ যাকে কেন্দ্র করে তিনি কোনো আমআদমি নন। বরং তিনি আল্লাহ-এর রসুল।
বড়দিন পালন একটি ইসলাম বহির্ভুত বিষয়। দ্বীনি ইসলামে এর কোনো স্থান নেই। আর তাই বড়দিন পালন বিদাত (দ্বীনের মধ্যে কোনো নতুন বিষয় সংযোজন যা ইসলামে নেই)।
আর বিদাত প্রসঙ্গে প্রিয় নবি মুহাম্মদ (সাঃ)বলেছেন -
"আবূ জাঁফর মুহাম্মদ ইবনু সাব্বাহ ও আবদুল্লাহ ইবনু আওন হিলালী (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের ধর্মীয় ব্যাপারে এমন বিষয় উদ্ভাবন করে যা তাতে নেই তা পরিত্যাজ্য। "
(বইঃ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৩০/ বিচার বিধান,হাদিস নম্বরঃ ৪৩৪৩)
মুসলিমের বর্ণনার ভাষা হলো এই যে,যে ব্যক্তি এমন কাজ করবে যা আমাদের দ্বীনে নেই, তা গ্রহণযোগ্য হবে না (অর্থাৎ প্রত্যাখ্যাত হয়ে যাবে)।
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, সর্বোত্তম কালাম হল আল্লাহর কিতাব, আর সর্বোত্তম পথ নির্দেশনা হল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পথ নির্দেশনা। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হল নতুনভাবে উদ্ভাবিত পন্থাসমূহ।
[ সহীহ বুখারী :তাওহিদ প্রকাশনী- ৭২৭৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৮১]
আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী(সাঃ) বলেনঃ "কিয়ামতের দিন আমার উম্মতের একটি দল আমার নিকটে আসতে চাইবে। কিন্তু তাদেরকে বাধা দেওয়া হবে। অতঃপর আমি বলবোঃ হে রব! ওরা আমার উম্মত। আল্লাহ তা'য়ালা বলবেনঃ তুমি জাননা এরা তোমার অবর্তমানে ধর্মের নামে নতুন নতুন বিদ'আত আবিষ্কার করেছে। নিশ্চয়ই এরা পশ্চাৎমুখী হয়ে মুরতাদ হয়েছিল।"
(বুখারী, হাদীস নং- ৬৫৮৫)
‘‘তোমাদের কাছে যে বিষয় সম্পর্কে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তা ঘটবেই, তোমরা তা ব্যর্থ করতে পারবে না’’- (সূরাহ আন‘আম ৬/১৩৪)।
"তোমরা অকৃতজ্ঞ হলে আল্লাহ তোমাদের মুখাপেক্ষী নন, তিনি তাঁর বান্দাদের অকৃতজ্ঞতা পছন্দ করেননা। যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও তাহলে তিনি তোমাদের জন্য এটাই পছন্দ করেন। একের বোঝা অন্যে বহন করবেনা। অতঃপর তোমাদের রবের নিকট তোমাদের প্রত্যাবর্তন এবং তোমরা যা করতে তিনি তোমাদেরকে তা অবগত করাবেন। অন্তরে যা আছে তা তিনি সম্যক অবগত।" (সূরাহ যুমার ৩৯/৭)
আল্লাহ্ তায়ালা আমাদেরকে শির্ক মুক্ত করুন, আমাদেরকে সমস্ত বিদাত থেকে দূরে থাকার তৌফিক দান করুন। আমিন।
কোন মন্তব্য নেই